কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে সবাই ফেভারিট হিসেবে দেখলেও তাতে দল কোনো বাড়তি চাপ অনুভব করছেন না কোচ লিওনেল স্কালোনি। তবে মূল্য লক্ষ্য তো অবশ্যই বিশ্বকাপ জয়। স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে যেতে কৌশলী ফুটবল খেলা সবচেয়ে জরুরি বলে মনে করেন স্কালোনি।
এবারের আসরে আর্জেন্টিনার হাতে শিরোপা দেখছে অনেকেই।
টানা ৩৫ ম্যাচ ধরে অপরাজিত আছে তারা। তিন বছরের বেশি সময় ধরে হারেনি স্কালোনির দল। এর মাঝে ২৮ বছরের শিরোপা খরা কাটিয়ে তারা জিতেছে কোপা আমেরিকা। পরে আরেকটি ট্রফি জিতেছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে হারিয়ে।
বিশ্বকাপের আগে আর্জেন্টিনার শেষ পরীক্ষা আজ বুধবার। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে আবু ধাবিতে তারা একটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে। আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে স্কালোনি বললেন, যে দল যত ভালো কৌশলী ফুটবল খেলতে পারবে তাদের বিশ্বকাপ জয়ের সম্ভাবনা থাকবে তত বেশি।
স্কালোনি বলেন, যে দলগুলি ভালোভাবে রক্ষণ সামলেছে, তারাই বিশ্বকাপ জিতেছে-এমন কিছু বলার চেয়ে আমি বলব স্মার্ট, সতর্ক দলগুলিই জিতেছে। তারা জানে কখন আক্রমণ করতে হয়, কখন রক্ষণ সামলাতে হয়। এ ব্যাপারে আমাদের ধারণা পরিষ্কার এবং এর সঙ্গে আমাদের মানিয়ে নিতে হবে। বুদ্ধিমত্তা ফুটবলের অংশ। বিষয়টি যদি আমাদের সঙ্গে মানানসই না হয়, তাহলে একটা পর্যায়ে আমাদের অন্য কিছু করতে হবে।
আর্জেন্টিনাকে ঘিরে সবার প্রত্যাশা অনেক বেশি থাকলেও দল কেন চাপে নেই, সেটিও ব্যাখ্যা করলেন স্কালোনি। তিনি বলেন, আমরা চাপে নেই, কারণ এটা ফুটবল। আমরা একটি বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছি, আর্জেন্টিনার জন্য এর অর্থ কী, তা আমরা জানি। তবুও এটি স্রেফ একটি খেলাই। তাই আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের মাঠে যেতে হবে এবং কাজগুলি ঠিকঠাক করতে হবে, যেভাবে আমরা খেলে থাকি। এরপর অনেক অভাবনীয় বিষয় থাকবে।
এরপর তিনি উদাহরণ টানলেন ২০০২ বিশ্বকাপের। সেইবার গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। স্কালোনি বলেন, ২০০২ বিশ্বকাপের উদাহরণ খুব পরিষ্কার। প্রতিপক্ষের চেয়ে আর্জেন্টিনা অনেক ভালো খেলেছিল এবং বাদ পড়েছিল। লোকেরা বুঝতে পেরেছিল, এই দলটি এভাবে বিদায়ের যোগ্য নয়। কিন্তু ফুটবলে এমন কিছু ঘটে। আমরা আমাদের মতো করে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। এরপর যে কোনো কিছু ঘটতে পারে।
১৯৮৬ সালের পর বিশ্বকাপ জিততে গোটা আর্জেন্টিনা তাকিয়ে আছে লিওনেল মেসি, আনহেল ডি মারিয়াদের দিকে। দেশবাসীর প্রতি বার্তাও দিলেন আর্জেন্টিনা কোচ।
তিনি বলেন, কোনো কিছুর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি না আমরা, কারণ এটা ফুটবল। এটা অননুমেয়। এত সুন্দর একটি খেলা, কিন্তু মাঝে মাঝে এতটাই অন্যায্য হয়ে ওঠে যে কোনো প্রতিশ্রুতি দেওয়া যায় না। এই প্রজন্ম খেলার একটি ধরন ধরে রেখেছে, আমরা তা চালিয়ে যেতে চাই। এরপর প্রতিপক্ষ আছে, কিছুটা ভাগ্যও সঙ্গে থাকতে হয়, যা বিশ্বকাপের জন্য দরকার।